প্রচলিত গল্পে খনা ছিলেন লঙ্কাদ্বীপের রাজকুমারী। মতান্তরে রাক্ষসকবলিত কোনো এক রাজ্যের অনিন্দ্যসুন্দর রাজকুমারীর নাম ছিল লীলাবতী যিনি পরে খনা নামে পরিচিত হন। খনা অর্থ বোবা এবং জিহ্বা কর্তনের পর নামটি প্রতিষ্ঠা পায়। কথিত আছে, জ্যোতিষশাস্ত্রে অগাধ জ্ঞানের ফলে খনা প্রায়ই রাজসভাতে আমন্ত্রিত হতেন। ফলে প্রতিহিংসাপরায়ণ শ্বশুর বরাহ মিহির ছেলে মিহিরকে লীলাবতীর জিহ্বা কাটার নির্দেশ দেন। বাবার নির্দেশে মিহির খনার জিহ্বা কর্তন করেন। তবে গল্পমতে কথিত রাজকন্যা স্বামীর কাছে অনুরোধ করেন যে, জিহ্বা কর্তনের আগে কিছু বলতে চান। স্বামী অনুমতি দেন। এ সময় খনা আবাদ, বন্যা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, যাত্রা, গবাদি, শস্যাদি, ফলাদি, গ্রহ-নক্ষত্রাদি সম্পর্কে বিজ্ঞানসম্মত বচন দেন যা পরে খনার বচন নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়। খনার বচন সবচেয়ে বেশি প্রচলিত কৃষক সামজে; যাদের কোনো লিখিত ভাষা নেই। মুখে মুখে প্রচলিত এসব ভাষা যুগ যুগ ধরে তাদের কৃষিকাজ এবং জীবনাচারে প্রভাবিত হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানীরা বিষয়টিকে সোজা চোখে না দেখলেও খনার বচন তার অবশ্যম্ভাব্যতা থেকে কক্ষচ্যুত হয়নি। বরং গ্রামের কৃষকরা বিজ্ঞানের ভাষার চেয়ে প্রবাদ-প্রবচনে অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তবে অনেক বিজ্ঞজন খনার বচনকে আধুনিক বিজ্ঞান হিসেবে অভিহিত করতে গিয়ে প্রবচনগুলো খনার বিজ্ঞান হিসেবে অভিজ্ঞান করেন। বচনগুলো অষ্টম অথবা নবম শতাব্দীতে রচিত। তবে আজো তা নির্ভুল ও সূক্ষ্মদৃষ্টিসম্পন্ন নীতিবাক্য হিসেবেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত। যেখানে ঋতুভেদে শস্য উৎপাদন, আবহাওয়ার উপলব্ধি সন্নিবেশিত হয়েছে এবং মাঝে মাঝে ভবিতব্য নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে চলেছে।
‘যদি বর্ষে আগনে/রাজা যায় মাগনে/ যদি বর্র্ষে পুষে/ কড়ি হয় তুষে/যদি বর্ষে মাঘের শেষ/ধন্য রাজা পুণ্য দেশ’ অর্থাৎ যদি অগ্রহায়ণে বৃষ্টি হয় তবে দুর্ভিক্ষে রাজাকে ভিক্ষা করতে হবে। পৌষ মাসে বৃষ্টি হলে তুষ বিক্রি করেও টাকা হয়, আর মাঘের শেষ দিন বৃষ্টি হলে রাজার ভা-ার শস্যে পূর্ণ হয়। কিংবা ‘যত জ্বালে ব্যঞ্জন মিষ্ট/তত জ্বালে ভাত নষ্ট’ অর্থাৎ মিষ্টি যত জ্বালানো যাবে তত ভালো, আর ভাত যত জ্বাল দেয়া যাবে তত নষ্ট হবে।
খনা তার প্রবাদে মাঝে মাঝে প্রাচীন ইতিহাসের কথা উল্লেখ করেছেন। শুভ-অশুভ দিনক্ষণ নিয়ে ভবিষ্যতের কথা চিরন্তন ভাষায় বলেছেন। ‘যদি না হয় আগনে বৃষ্টি/তবে না হয় কাঁঠালের সৃষ্টি’ অর্থাৎ অগ্রহায়ণে বৃষ্টি না হলে কাঁঠালের ফলন ভালো হবে না।
কৃষিকাজে খনার বচনে অনেক নির্দেশনা আছে যা আধুনিক কৃষিবিজ্ঞানের সঙ্গে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ। ‘হাত বিশ করি ফাঁক/আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ’ কিংবা ‘গাছগাছালি ঘন সবে না/গাছ হবে তার ফল হবে না’ কিংবা ‘খনা ডেকে বলে যান/ রোদে ধান ছায়ায় পান’ কিংবা ‘ষোল চাষে মুলা/ তার অর্ধেক তুলা/তার অর্ধেক ধান/ বিনা চাষে পান।’ গবাদিপশু নিয়ে খনা অনেক অনুভূতিপ্রবণ বচন রচনা করেছেন। ‘যে চাষা খায় পেট ভরে/গরুর পানে চায় না ফিরে/গরু না পায় ঘাস পানি/
ফলন নাই তার হয়রানি’ কিংবা ‘গরুর পিঠে তুললে হাত/ গিরস্তে কবু পায় না ভাত।’ প্রকৃতিবিষয়ক প্রবচনে তিনি মানুষের জন্য সাবধান বার্তা ঘোষণা করেছেনÑ ‘আলো হাওয়া বেঁধো না/রোগে ভোগে মরো না।’
বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের ‘ঊধৎষু ঃড় নবফ, ধহফ বধৎষু ঃড় ৎরংব, সধশবং ধ সধহ যবধষঃযু, বিধষঃযু ধহফ রিংব’ সেই বিখ্যাত উক্তির বহু আগে খনা লিখে গেছেনÑ ‘সকাল শোয় সকাল ওঠে/তার কড়ি না বৈদ্য লুটে’ অর্থাৎ যে আগে শয্যায় যায় এবং আগে শয্যা পরিত্যাগ করে তার জন্য ডাক্তারের প্রয়োজন হয় না। এবং সব সমালোচনার উত্তর আছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চালু হওয়া ‘উধুষরমযঃ ংধারহম ঃরসব’ পদ্ধতিও তার সমর্থক।
লেখাটি পদ্মা পাড়ের মানুষ থেকে নেওয়া
Friday, December 11, 2009
খনা কাহিনী - ২
'খনা' বাংলার লোকজীবন সম্পর্কে অনেক ভবিষ্যত বাণী করেছেন যা খনার বচন নামে পরিচিত। বচন গুলোতে আবহাওয়া , জ্যোতিষ ও ভু-তত্ব ভেদে শস্যের ক্ষয়ক্ষতি ও ফলন সম্পর্কে যে ধারণা দেয়া হয়েছে তার অনেকগুলোই বানীক সত্যের খুব কাছাকাছি। খনার উপদেশ গুলো দীর্ঘকাল বাংলার আবহাওয়া ও কৃষিকাজের দিকনির্দেশক হিসেবে আজও কাজ করছে।
খনা- নামটির সাথে যতটা পরিচিত বাংলার মানুষ ততটা অপরিচিত তার যাপিত জীবন সম্পর্কে। অনেকেই হয়ত জানেন না যে খনা ছিলেন একজন নারী। আ্যস্ট্রলজিতেও তার পারদর্শিতা ছিল কিংবদন্তিতুল্য। কিন্তু ধীরে ধীরে বচন রচয়িতা হিসেবে এক বিদুষী নারীতে পরিনত হন খনা। খনার আবির্ভাব সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা নেই তবে অনেকে বলেন ১২০০ খ্রীষ্টাব্দের মাঝামাঝি তাঁর আগমন ঘটেছিল। তাঁর ব্যাক্তিগত পরিচয়ও লোকসাহিত্য নির্ভর এবং সেক্ষেত্রে অনেক দ্বীমতও রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে এক কিংবদন্তি অনুযায়ী তাঁর নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাতের দেউলি গ্রামে। শোনা যায় তাঁর পিতার নাম ছিল অনাচার্য । জীবনের অনেক খানি সময় বাস করেন সে সময়কার চন্দ্রকেতু রাজার আশ্রম চন্দ্রপুরে।
সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অপর এক কিংবদন্তি অনুসারে খনা ছিলেন সিংহলরাজের কন্যা। ভক্ষনে জন্মগ্রহণ করায় তাঁর নাম রাখা হয় ক্ষনা বা খনা। তখন বিক্রমপুরের রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহপুত্র মিহিরের জন্ম লাভের পর গণনা করে দেখেনযে তাঁর আয়ু মাত্র এক বছর। তাই পুত্রকে তিনি একটি পাত্রে করে সমুদ্রের জলে ভাসিয়ে দেন। পাত্রটি ভাসতে ভাসতে সিংহল দ্বীপে পৌঁছায় এবং লালন পালন শেষে সিংহল রাজা যুবক মিহিরকে খনার সাথে বিয়ে দেন। সেখানে ধীরে ধীরে মিহির ও খনা জ্যোতিষ শাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন করেন। এরপর মিহির সস্ত্রীক নিজভূমে তাঁর পিতার কাছে ফিরে আসেন এবং একসময় রাজা বিক্রমাদিত্যের সভাসদ হন এবং পিতার ন্যায় জ্যোতিষশাস্ত্রে প্রতিপত্তি লাভ করেন। একদিন পিতা-পুত্র আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পড়েন। আমাদের বুদ্ধিমতী খনা সেই সমস্যার সমাধান করে রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে রাজসভায় প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে পিতার আদেশে মিহির খনার জীহ্বা কেটে দেন! এর কিছুকাল পরে খনার মৃত্য ঘটে। কথিত আছে খনার জীহ্বা কেটে নেয়ার জন্য তাঁর শাশুড়ির সাথে দ্বন্দই বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
খনার বচন বাংলার লোক সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যান্ত্রীক জীবনের চরম জটিলতা আর পাশ্চাত্যের দূষিত হাওয়া আমাদের ধীরে ধীরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নিজস্ব সংস্কৃতি অঙ্গন থেকে । ভুলে যাচ্ছি আমাদের কিংবদন্তিতুল্য কেবলমাত্র লোকের মুখে মুখে প্রচারিত হয়ে আসা এক বিদূষী নারী খনাকে, যিনি নিজের এক জীহ্বার বিনিময়ে নিজের কথা ছড়িয়ে দিয়েছেন বাংলার কোটি কোটি মানুষের জীহ্বায়। যুগ যুগ ধরে মানুষেরা খনার বচন প্রকাশ করে চলেছেন নিজের জীহ্বা দ্বারা!
লেখাটি বাঁধ ভাঙার আওয়াজ থেকে নেওয়া
খনা- নামটির সাথে যতটা পরিচিত বাংলার মানুষ ততটা অপরিচিত তার যাপিত জীবন সম্পর্কে। অনেকেই হয়ত জানেন না যে খনা ছিলেন একজন নারী। আ্যস্ট্রলজিতেও তার পারদর্শিতা ছিল কিংবদন্তিতুল্য। কিন্তু ধীরে ধীরে বচন রচয়িতা হিসেবে এক বিদুষী নারীতে পরিনত হন খনা। খনার আবির্ভাব সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা নেই তবে অনেকে বলেন ১২০০ খ্রীষ্টাব্দের মাঝামাঝি তাঁর আগমন ঘটেছিল। তাঁর ব্যাক্তিগত পরিচয়ও লোকসাহিত্য নির্ভর এবং সেক্ষেত্রে অনেক দ্বীমতও রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে এক কিংবদন্তি অনুযায়ী তাঁর নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাতের দেউলি গ্রামে। শোনা যায় তাঁর পিতার নাম ছিল অনাচার্য । জীবনের অনেক খানি সময় বাস করেন সে সময়কার চন্দ্রকেতু রাজার আশ্রম চন্দ্রপুরে।
সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অপর এক কিংবদন্তি অনুসারে খনা ছিলেন সিংহলরাজের কন্যা। ভক্ষনে জন্মগ্রহণ করায় তাঁর নাম রাখা হয় ক্ষনা বা খনা। তখন বিক্রমপুরের রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহপুত্র মিহিরের জন্ম লাভের পর গণনা করে দেখেনযে তাঁর আয়ু মাত্র এক বছর। তাই পুত্রকে তিনি একটি পাত্রে করে সমুদ্রের জলে ভাসিয়ে দেন। পাত্রটি ভাসতে ভাসতে সিংহল দ্বীপে পৌঁছায় এবং লালন পালন শেষে সিংহল রাজা যুবক মিহিরকে খনার সাথে বিয়ে দেন। সেখানে ধীরে ধীরে মিহির ও খনা জ্যোতিষ শাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন করেন। এরপর মিহির সস্ত্রীক নিজভূমে তাঁর পিতার কাছে ফিরে আসেন এবং একসময় রাজা বিক্রমাদিত্যের সভাসদ হন এবং পিতার ন্যায় জ্যোতিষশাস্ত্রে প্রতিপত্তি লাভ করেন। একদিন পিতা-পুত্র আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পড়েন। আমাদের বুদ্ধিমতী খনা সেই সমস্যার সমাধান করে রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে রাজসভায় প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে পিতার আদেশে মিহির খনার জীহ্বা কেটে দেন! এর কিছুকাল পরে খনার মৃত্য ঘটে। কথিত আছে খনার জীহ্বা কেটে নেয়ার জন্য তাঁর শাশুড়ির সাথে দ্বন্দই বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
খনার বচন বাংলার লোক সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যান্ত্রীক জীবনের চরম জটিলতা আর পাশ্চাত্যের দূষিত হাওয়া আমাদের ধীরে ধীরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নিজস্ব সংস্কৃতি অঙ্গন থেকে । ভুলে যাচ্ছি আমাদের কিংবদন্তিতুল্য কেবলমাত্র লোকের মুখে মুখে প্রচারিত হয়ে আসা এক বিদূষী নারী খনাকে, যিনি নিজের এক জীহ্বার বিনিময়ে নিজের কথা ছড়িয়ে দিয়েছেন বাংলার কোটি কোটি মানুষের জীহ্বায়। যুগ যুগ ধরে মানুষেরা খনার বচন প্রকাশ করে চলেছেন নিজের জীহ্বা দ্বারা!
লেখাটি বাঁধ ভাঙার আওয়াজ থেকে নেওয়া
12:34 PM
|
Labels: Life Story
Permalink 0
Read more>>
Labels: Life Story
Permalink 0
Read more>>

খনা কাহিনী - ১
খনা বা ক্ষণা কথিত আছে তার আসল নাম লীলাবতী আর্যা জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী নারীর যিনি বচন রচনার জন্যেই বেশি সমাদৃত, মূলত খনার ভবিষ্যতবাণীগুলোই খনার বচন নামে বহুল পরিচিত। মনে করা হয় ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তার আবির্ভাব হয়েছিল। কিংবদন্তি অনুসারে তিনি বাস করতেন পশ্চিমবঙ্গের চব্বিস পরগনা জেলার বারাসাতের দেউলিয়া গ্রামে। তার পিতার নাম ছিন অনাচার্য। অন্য একটি কিংবদন্তি অনুসারে তিনি ছিলেন সিংহলরাজের কন্যা। বিক্রমপুরের রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজ সভার প্রখ্যাত জোতির্বিদ বরাহপুত্র মিহিরকে খনার স্বামীরূপে পাওয়া যায়।
খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। আনুমানিক ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত। অনেকের মতে খনা নাম্নী জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী বাঙালি নারীর রচনা এই ছড়া গুলো। তবে এ নিয়ে মতভেদ আছে। অজস্র খনার বচন যুগ যুগান্তর ধরে গ্রাম বাংলার জন জীবনের সাথে মিশে আছে। জনশ্রুতি আছে যে, খনার নিবাস ছিল চব্বিশ পরগণা র তৎকালীন বারাসাত মহকুমার দেউলি গ্রামে। এমনকি রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের একজন বলে কথিত বরাহমিহির বা বররুচি এর পুত্র মিহির তার স্বামী ছিল বলেও কিংবদন্তী আছে। এই রচনা গুলো চার ভাগে বিভক্ত।কথিত আছে বরাহ তার পুত্রের জন্ম কোষ্ঠি গননা করে পুত্রের আয়ূ এক বছর দেখতে পেয়ে শিশু পুত্র মিহিরকে একটি পাত্রে করে সমুদ্র জলে ভাসিয়ে দেন। পাত্রটি ভাসতে ভাসতে সিংহল দ্বীপে পৌছলে সিংহলরাজ শিশুটিকে লালন পালন করেন এবং পরে কন্যা খনার সাথে বিয়ে দেন। খনা এবং মিহির দু'জনেই জ্যোতিষশাস্ত্রে দক্ষতা অর্জন করেন। মিহির একসময় বিক্রমাদিত্যের সভাসদ হন। একদিন পিতা বরাহ এবং পুত্র মিহির আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পরলে, খনা এ সমস্যার সমাধান দিয়ে রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গণনা করে খনার দেওয়া পূর্বাভাস রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হতো বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে দশম রত্ন হিসেবে আখ্যা দেন। রাজসভায় প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে প্রতিহিংসায় বরাহের আদেশে মিহির খনার জিহ্বা কেটে দেন। এর কিছুকাল পরে খনার মৃত্যু হয়।
•কৃষিকাজের প্রথা ও কুসংস্কার।
•কৃষিকাজ ফলিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান।
•আবহাওয়া জ্ঞান।
•শস্যের যত্ন সম্পর্কিত উপদেশ।
বরাহমিহির প্রাচীন ভারতের (আনুমানিক ৫০৫ - ৫৮৭) একজন বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং কবি। তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান ছাড়াও গণিতশাস্ত্র, পূর্তবিদ্যা, আবহবিদ্যা, এবং স্থাপত্যবিদ্যায় পণ্ডিত ছিলেন।
এই মনীষীর জন্ম ভারতের অবন্তিনগরে। রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের অন্যতম হিসেবে তিনি স্বীকৃত। ভারতীয় পঞ্জিকার অন্যতম সংস্কারক ছিলেন তিনি। তিনিই বছর গণনার সময় বেশাখকে প্রথম মাস হিসেবে ধরার প্রচলন করেন। আগে চৈত্র এবং বৈশাখকে বসন্ত ঋতুর অন্তর্গত ধরা হতো। পৃথিবীর আকার এবং আকৃতি সম্বন্ধে তার সঠিক ধারণা ছিল। তার জন্ম ৫৮৭ ধরা হলেও কারও কারও মতে তা ৫৭৮।
তার রচিত বিখ্যাত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে:
•পঞ্চসিদ্ধান্তিকা; ৫৫০ খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়। পাঁচটা খন্ড নিয়ে গঠিত এই বইটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং জ্যোতিষশাস্ত্রের সংক্ষিপ্তসার বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে। পাঁচটি খন্ড হচ্ছ: সূর্যসিদ্ধান্ত, রোমকসিদ্ধান্ত, পৌলিশসিদ্ধান্ত, পৈতামহসিদ্ধান্ত এবং বাশিষ্ঠসিদ্ধান্ত। আরব দার্শনিক আল খোয়ারিজমি সূর্যসিদ্ধান্ত দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আল জিবর ব আল মুকাবলা রচনা করেন বলে মনে করা হয়।
•বৃহৎসংহিতা; একটি প্রসিদ্ধ জ্যোতিষ গ্রন্থ যা পদ্য আকারে লিখা। এতে তিনি জ্যোতিষী দৃষ্টিকোণ থেকে বহু পাথরের বিবরণ এবং পাক-ভারতের ভৌগলিক তথ্য সন্নিবেশিত করেন। এছাড়াও এতে সূর্য ও চন্দ্রের গতি ও প্রভাব, আবহবিদ্যা, স্থাপত্য এবং পূর্তবিদ্যার নানা বিষয় প্রসঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তার কথা আলোচিত হয়েছে। এই বইয়েই তিনি ব্রজলেপ নামে একটি বস্তুর প্রস্তুতপ্রণালী ব্যাখ্যা করেছেন যা আধুনিককালের সিমেন্টের সমগোত্রীয় ছিল। সে সময় ভারতে বরাহমিহির উদ্ভাবিত এই ব্রজলেপ দিয়েই বড় বড় দালান কোঠার ইটের গাঁথুনি তৈরীতে ব্যবহৃত হতো।
এই লেখাটি উইকিপিডিয়া হতে নেওয়া।
খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। আনুমানিক ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত। অনেকের মতে খনা নাম্নী জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী বাঙালি নারীর রচনা এই ছড়া গুলো। তবে এ নিয়ে মতভেদ আছে। অজস্র খনার বচন যুগ যুগান্তর ধরে গ্রাম বাংলার জন জীবনের সাথে মিশে আছে। জনশ্রুতি আছে যে, খনার নিবাস ছিল চব্বিশ পরগণা র তৎকালীন বারাসাত মহকুমার দেউলি গ্রামে। এমনকি রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের একজন বলে কথিত বরাহমিহির বা বররুচি এর পুত্র মিহির তার স্বামী ছিল বলেও কিংবদন্তী আছে। এই রচনা গুলো চার ভাগে বিভক্ত।কথিত আছে বরাহ তার পুত্রের জন্ম কোষ্ঠি গননা করে পুত্রের আয়ূ এক বছর দেখতে পেয়ে শিশু পুত্র মিহিরকে একটি পাত্রে করে সমুদ্র জলে ভাসিয়ে দেন। পাত্রটি ভাসতে ভাসতে সিংহল দ্বীপে পৌছলে সিংহলরাজ শিশুটিকে লালন পালন করেন এবং পরে কন্যা খনার সাথে বিয়ে দেন। খনা এবং মিহির দু'জনেই জ্যোতিষশাস্ত্রে দক্ষতা অর্জন করেন। মিহির একসময় বিক্রমাদিত্যের সভাসদ হন। একদিন পিতা বরাহ এবং পুত্র মিহির আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পরলে, খনা এ সমস্যার সমাধান দিয়ে রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গণনা করে খনার দেওয়া পূর্বাভাস রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হতো বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে দশম রত্ন হিসেবে আখ্যা দেন। রাজসভায় প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে প্রতিহিংসায় বরাহের আদেশে মিহির খনার জিহ্বা কেটে দেন। এর কিছুকাল পরে খনার মৃত্যু হয়।
•কৃষিকাজের প্রথা ও কুসংস্কার।
•কৃষিকাজ ফলিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান।
•আবহাওয়া জ্ঞান।
•শস্যের যত্ন সম্পর্কিত উপদেশ।
বরাহমিহির প্রাচীন ভারতের (আনুমানিক ৫০৫ - ৫৮৭) একজন বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং কবি। তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান ছাড়াও গণিতশাস্ত্র, পূর্তবিদ্যা, আবহবিদ্যা, এবং স্থাপত্যবিদ্যায় পণ্ডিত ছিলেন।
এই মনীষীর জন্ম ভারতের অবন্তিনগরে। রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের অন্যতম হিসেবে তিনি স্বীকৃত। ভারতীয় পঞ্জিকার অন্যতম সংস্কারক ছিলেন তিনি। তিনিই বছর গণনার সময় বেশাখকে প্রথম মাস হিসেবে ধরার প্রচলন করেন। আগে চৈত্র এবং বৈশাখকে বসন্ত ঋতুর অন্তর্গত ধরা হতো। পৃথিবীর আকার এবং আকৃতি সম্বন্ধে তার সঠিক ধারণা ছিল। তার জন্ম ৫৮৭ ধরা হলেও কারও কারও মতে তা ৫৭৮।
তার রচিত বিখ্যাত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে:
•পঞ্চসিদ্ধান্তিকা; ৫৫০ খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়। পাঁচটা খন্ড নিয়ে গঠিত এই বইটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং জ্যোতিষশাস্ত্রের সংক্ষিপ্তসার বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে। পাঁচটি খন্ড হচ্ছ: সূর্যসিদ্ধান্ত, রোমকসিদ্ধান্ত, পৌলিশসিদ্ধান্ত, পৈতামহসিদ্ধান্ত এবং বাশিষ্ঠসিদ্ধান্ত। আরব দার্শনিক আল খোয়ারিজমি সূর্যসিদ্ধান্ত দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আল জিবর ব আল মুকাবলা রচনা করেন বলে মনে করা হয়।
•বৃহৎসংহিতা; একটি প্রসিদ্ধ জ্যোতিষ গ্রন্থ যা পদ্য আকারে লিখা। এতে তিনি জ্যোতিষী দৃষ্টিকোণ থেকে বহু পাথরের বিবরণ এবং পাক-ভারতের ভৌগলিক তথ্য সন্নিবেশিত করেন। এছাড়াও এতে সূর্য ও চন্দ্রের গতি ও প্রভাব, আবহবিদ্যা, স্থাপত্য এবং পূর্তবিদ্যার নানা বিষয় প্রসঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তার কথা আলোচিত হয়েছে। এই বইয়েই তিনি ব্রজলেপ নামে একটি বস্তুর প্রস্তুতপ্রণালী ব্যাখ্যা করেছেন যা আধুনিককালের সিমেন্টের সমগোত্রীয় ছিল। সে সময় ভারতে বরাহমিহির উদ্ভাবিত এই ব্রজলেপ দিয়েই বড় বড় দালান কোঠার ইটের গাঁথুনি তৈরীতে ব্যবহৃত হতো।
এই লেখাটি উইকিপিডিয়া হতে নেওয়া।
12:26 PM
|
Labels: Life Story
Permalink 0
Read more>>
Labels: Life Story
Permalink 0
Read more>>

Subscribe to:
Posts (Atom)